ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাশের মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার গ্রাফিতি আবারও আঁকা হয়েছে। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) গভীর রাতে এই গ্রাফিতি নতুন করে আঁকা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) জুতা ও ঝাড়ু নিক্ষেপ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
এর আগে ঘৃণাস্তম্ভ নামে পরিচিত এই গ্রাফিতি মুছে ফেলার চেষ্টা ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে, তাদের অনুমতি ছাড়া প্রশাসন রাতের অন্ধকারে এই পদক্ষেপ নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম এই ঘটনাকে অনিচ্ছাকৃত ভুল হিসেবে উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবি করেছে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে ছাত্রলীগের তত্ত্বাবধানে এই গ্রাফিতি তৈরি করা হয়েছিল। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর এটি জনতার ক্ষোভ প্রকাশের প্রতীক হয়ে ওঠে। ছাত্র–জনতা গ্রাফিটির ওপর জুতা নিক্ষেপ, লাল রঙ ছিটিয়ে এবং ঝাড়ু ও ইটপাটকেল মেরে প্রতিবাদ জানায়। এই কারণে একসময়ের সম্মানজনক এই চিত্রকর্ম এখন ঘৃণাস্তম্ভ নামে পরিচিত।
রোববার মধ্যরাতে চারুশিল্পীরা আবারও শেখ হাসিনার গ্রাফিতি নতুনভাবে আঁকা শুরু করেন। রাতভর চেষ্টা চালিয়ে তারা ঘৃণাস্তম্ভ এর আগের অবয়ব ফিরিয়ে আনেন। তবে শিক্ষার্থীদের এই পদক্ষেপে ক্ষোভ রয়েই গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন ঘৃণাস্তম্ভ মুছে ফেলার চেষ্টার মাধ্যমে জনমতের ওপর আঘাত হানা হয়েছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেছেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এই ঘটনার ফলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আজকের কর্মসূচি ঘিরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার আশ্বাস দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ স্পষ্ট।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পুরো দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এই গ্রাফিতি শুধু চিত্র নয় এটি বর্তমান সমাজের রাজনৈতিক বাস্তবতার একটি গভীর প্রতিচ্ছবি।