মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী জিমি কার্টার আর নেই। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময়ে তার নিজ শহর জর্জিয়ার প্লেইন্সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ১০০ বছর। জিমি কার্টার সেন্টার এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জিমি কার্টারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদরা। তার অসাধারণ জীবন ও অবদান স্মরণ করে শোকবার্তায় তাকে শান্তি ও মানবাধিকার রক্ষার এক অনন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
জিমি কার্টার ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর জর্জিয়ার ছোট্ট শহর প্লেইন্সে জন্মগ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে একজন অফিসার হিসেবে পারমাণবিক সাবমেরিন বহরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। এরপর পিতার মৃত্যুর পর ১৯৫৩ সালে পারিবারিক চিনাবাদাম চাষে মনোযোগ দিতে নিজ শহরে ফিরে আসেন।
তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয় জর্জিয়ার প্রাদেশিক আইনসভায় সদস্য হিসেবে। এরপর ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জর্জিয়ার গভর্নর পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি জেরাল্ড ফোর্ডকে পরাজিত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তার শান্তিপূর্ণ নেতৃত্ব ও মানবাধিকার রক্ষার প্রতি অবদান তাকে ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করে।
কার্টার ছিলেন মার্কিন ইতিহাসের প্রথম শতবর্ষী প্রেসিডেন্ট। তার নেতৃত্ব ও জীবনধারা তাকে বিশ্বজুড়ে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছে। তার পুত্র চিপ কার্টার বলেন আমার বাবা শুধু আমার নয় শান্তি, মানবাধিকার ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় বিশ্বাসী সবার নায়ক ছিলেন।
কার্টারের স্ত্রী রোসালিন ২০২৩ সালে মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি চার সন্তান ও ১১ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে বিশ্বনেতারা মানবাধিকারকর্মী এবং সাধারণ মানুষ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
জিমি কার্টারের জীবন আমাদের শেখায় যে সততা মানবিকতা ও নেতৃত্ব এক ব্যক্তিকে কেবল নেতা নয় বরং ইতিহাসের একটি অংশে পরিণত করতে পারে।