বৃহস্পতিবার, ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

১৫ জানুয়ারির মধ্যে অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দাবি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের প্রতিবাদে উত্তাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় মার্চ ফর ইউনিটি শীর্ষক সমাবেশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির এই উদ্যোগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র জারির দাবি তোলা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বক্তব্যে বলেন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ষড়যন্ত্র চলছে যা আমাদের স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। আগে সতীদাহ প্রথা দেখেছি এখন নথিদাহ প্রথার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি আরও বলেন সরকারকে অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য কমানো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করা এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডসহ সব হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

হাসনাত আরও আহ্বান জানান ছাত্র-জনতা যেন পাড়া-মহল্লায় গিয়ে ঘোষণাপত্রের বিষয়ে জনগণের মতামত নেয়। তিনি বলেন ফ্যাসিবাদ এবং মুজিববাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন ৭১, ৯০, ২৪ এর শহীদদের ত্যাগ ঘোষণাপত্রে থাকতে হবে। ৫৩ বছরের ভেঙে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করে আমরা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই। তিনি আরও বলেন ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা বিলোপ না হলে ছাত্র-জনতা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।

সারাদেশ থেকে আসা ছাত্র-জনতা শহীদ মিনারে জমায়েত হয়ে বিভিন্ন স্লোগানে আন্দোলনকে উজ্জীবিত করেন। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ফাঁসি চাই খুনি হাসিনার ভারতীয় আগ্রাসন নিপাত যাক এবং দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন সরকারের কাছে পাঁচ মাসেও কি অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেয়ার সময় ছিল না? এটি আমাদের ঐতিহাসিক দায়। আলোচনার টেবিল থেকে কোনো সমাধান আসছে না রাজপথই একমাত্র উপায়।

 

এই সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ ব্যাখ্যা করে বলেন ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।

শহীদ মিনারে ভোর থেকেই ছাত্র-জনতা উপস্থিত হতে থাকে। ছোট ছোট মিছিল শেষে দুপুরের পর থেকে জনসমাগমে শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির এই সমাবেশে বৈষম্য দূরীকরণ এবং গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। তারা অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে একটি নতুন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র জারির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

 

আরও পোস্ট