ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ড্রোন হামলায় রাশিয়ার প্রভাবশালী সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়া-এর একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক আলেক্সান্দার মারতেমিয়ানভ নিহত হয়েছেন। শনিবার (৫ জানুয়ারি) ইজভেস্তিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এই দুঃসংবাদ নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, মারতেমিয়ানভ একটি বেসামরিক গাড়িতে ভ্রমণ করছিলেন যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্ক এবং উত্তরের হরলিভকা শহরের মধ্যে সংযোগকারী হাইওয়ে দিয়ে যাচ্ছিল। গাড়িটি মূল যোগাযোগ এলাকার বাইরে থাকলেও ইউক্রেনীয় বাহিনীর ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এই হামলায় মারতেমিয়ানভ নিহত হন এবং গাড়িতে থাকা অন্য দুজন আহত হন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এটি ইউক্রেনীয় সরকারের ধারাবাহিক রক্তাক্ত নৃশংসতার আরেকটি জঘন্য উদাহরণ। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার বিরোধী মতাদর্শের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কৌশল ব্যবহার করছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস জানিয়েছে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন সাংবাদিক এই সংঘাতে নিহত হয়েছেন।
রাশিয়ার বার্তা সংস্থা আরআইএ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মারতেমিয়ানভের সঙ্গে থাকা ইজভেস্তিয়ার আরও দুই প্রতিনিধি এবং স্থানীয় এক প্রকাশনার দুই সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের জেরে সাংবাদিকদের জন্য এই অঞ্চলটি দিন দিন আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় সাংবাদিক মারতেমিয়ানভের মৃত্যু কেবল যুদ্ধক্ষেত্রের নৃশংসতাকেই নয বরং সংঘাতের মধ্যে থাকা সাংবাদিকদের চরম ঝুঁকির দিকটিও উন্মোচিত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।