যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির মন্ত্রী এবং বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে ওঠা সম্পত্তি-সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে গার্ডিয়ানসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম তার সম্পত্তি নিয়ে বিভিন্ন বিতর্কিত তথ্য প্রকাশ করেছে, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গার্ডিয়ান জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের কিছু সম্পত্তি, যা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সেগুলোতে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই বিষয়ে টিউলিপ একটি চিঠি লিখে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ আচরণবিধি তত্ত্বাবধানকারী স্বাধীন উপদেষ্টা লউরি ম্যাগনাসের কাছে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন।
চিঠিতে টিউলিপ উল্লেখ করেন আমার আর্থিক বিষয় এবং বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের সম্পর্ক নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা ভুল। আমি নিশ্চিত যে কোনো ভুল কাজ করিনি। তবে, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তথ্যানুসারে টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের কিংস ক্রস, হ্যাম্পস্টেড এবং পূর্ব ফিঞ্চলে সম্পত্তি নিয়ে বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছেন।
১. কিংস ক্রসের একটি ফ্ল্যাট, যা ২০০১ সালে আবদুল মোতালিফ নামের এক ব্যবসায়ী কিনেছিলেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ফ্ল্যাটটি পরে টিউলিপ বিনামূল্যে মালিকানা পেয়েছেন।
২. হ্যাম্পস্টেডের বাড়ি, যা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মঈন গনির মাধ্যমে টিউলিপের বোনের নামে কেনা হয় বলে দাবি করা হয়েছে।
৩. পূর্ব ফিঞ্চলের বিলাসবহুল বাসা আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার সদস্য আবদুল করিমের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়ার বিষয়েও বিতর্ক রয়েছে।
লেবার পার্টি জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভসের নেতৃত্বে চীনে অনুষ্ঠিতব্য একটি সরকারি সফরে অংশ নিচ্ছেন না। তবে এটি টিউলিপের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নাকি দলীয় চাপের কারণে নেওয়া হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়।
টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেছেন। তার মতে, এ ধরনের বিতর্ক তার রাজনৈতিক জীবনকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। তবে নিজের সততা প্রমাণ করতে এবং সন্দেহ দূর করতে তিনি স্বাধীন তদন্ত চান।
যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই অভিযোগ ঘিরে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আগামী দিনে আরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।