বৃহস্পতিবার, ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

প্রবীর মিত্র: নন্দিত অভিনেতার জানাজা এফডিসিতে, দাফন আজিমপুরে

ঢাকাই চলচ্চিত্রের স্বর্ণালী যুগের কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র আর নেই। রবিবার (৫ জানুয়ারি) রাত ১০টা ১০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্রের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ আজ (৬ জানুয়ারি) চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে নেয়া হবে। সেখানে বাদ আসর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাকে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।

গত ২২ ডিসেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রবীর মিত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হলে আইসিইউতে নেয়া হয়। রক্তস্বল্পতা ও প্লাটিলেটের অভাবে তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন জটিল হয়ে ওঠে।

১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। পুরান ঢাকায় বেড়ে ওঠা এই গুণী শিল্পী স্কুলজীবন থেকেই নাটকে অভিনয় শুরু করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে তার অভিনয় সবার মন জয় করেছিল।

১৯৬৯ সালে ‘জলছবি’ সিনেমার মাধ্যমে রূপালী পর্দায় অভিষেক হয় প্রবীর মিত্রের। সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালে। ক্যারিয়ারের শুরুতে নায়ক হিসেবে কাজ করলেও পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে তিতাস একটি নদীর নাম, জীবন তৃষ্ণা, সেয়ানা, ফরিয়াদ, রক্ত শপথ, চরিত্রহীন, অঙ্গার , এবং মধুমিতা।

১৯৮২ সালে ‘বড় ভালো লোক ছিল সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা পান। তবে এ গুণী অভিনেতা একুশে পদক কিংবা স্বাধীনতা পদকের মতো বড় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাননি।

চলচ্চিত্র জগতে প্রায় পাঁচ দশক ধরে আলো ছড়ানো প্রবীর মিত্র সর্বশেষ ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বৃদ্ধাশ্রম’ সিনেমায় অভিনয় করেন।

প্রবীর মিত্রের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পুরো বাংলাদেশ শোকাহত। তার সহকর্মী ও চলচ্চিত্রপ্রেমীরা বলছেন প্রবীর মিত্র ছিলেন সত্যিকারের শিল্পী যার মতো অভিনেতার অভাব পূরণ করা কঠিন।

প্রবীর মিত্র আমাদের হৃদয়ে অমর থাকবেন তার কর্মগুণে। তার বিদায় বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে এক অপূরণীয় ক্ষতি।

আরও পোস্ট