বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা সরকারের চালানো বর্বর বিমান হামলায় অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এই হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় উদ্ধারকর্মী ও আরাকান আর্মি নামে একটি জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থু খা জানিয়েছেন প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর হামলায় ৪০ জন বেসামরিক নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। আরাকান আর্মি গত বছর রাখাইনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে নিয়ে রাজ্যের রাজধানী সিত্তেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
মিয়ানমারে ২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি-র নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের পতন ঘটে। এরপর থেকেই জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়। রাখাইনে এই সংঘাত বিশেষভাবে তীব্র আকার ধারণ করেছে, যেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জান্তা বাহিনী নিয়মিত সংঘর্ষে লিপ্ত।
রাখাইন অঞ্চলে চলমান সংঘর্ষে স্থানীয় বেসামরিক জনগণ ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপত্তার অভাবে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে তারা দিন কাটাচ্ছে। সাম্প্রতিক এই বিমান হামলার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমারের সামরিক জান্তার এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি বলে বিশ্লেষকদের মত। এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকলে অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আরও নষ্ট হবে এবং বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে এই সংকট মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে রাখাইনের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ কার্যক্রম এবং কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।