ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জেদিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মদ দেইফ ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তবে হামাস এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেনি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৩ জুলাই গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এলাকায় চালানো এক বিমান হামলায় মোহাম্মদ দেইফ নিহত হন।
তবে এতদিন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি। এখন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা নিশ্চিত হয়েছে যে হামলায় দেইফ মারা গেছেন।
মোহাম্মদ দেইফ, যার প্রকৃত নাম মোহাম্মদ মাসরি, ১৯৬৫ সালে গাজার খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৭ সালে প্রথম ইন্তিফাদার সময় তিনি হামাসে যোগ দেন এবং পরে আল-কাসসাম ব্রিগেডের নেতৃত্বে আসেন।
তার নেতৃত্বে হামাসের সামরিক শাখা শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং একাধিকবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক হামলা চালায়।
দেইফ ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা একজন নেতা ছিলেন। ইসরায়েলি বাহিনী তার বিরুদ্ধে একাধিকবার হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে। ২০১৪ সালে এক বিমান হামলায় তার স্ত্রী, সাত মাসের সন্তান এবং তিন বছর বয়সী কন্যা নিহত হন। তবে তিনি প্রাণে বেঁচে যান, যদিও হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন এবং একটি চোখ হারান।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে মোহাম্মদ দেইফের নাম উঠে আসে। ঐ হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়।
এরপর থেকেই ইসরায়েল তাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে এবং একের পর এক হামলা চালাতে থাকে।
বিশ্লেষকদের মতে দেইফের মৃত্যু হামাসের জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে। তার দীর্ঘদিনের নেতৃত্বে হামাসের সামরিক শাখা কার্যকরভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। দেইফের অনুপস্থিতিতে সংগঠনটির ভবিষ্যৎ কৌশল কেমন হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
হামাস এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে মোহাম্মদ দেইফের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেনি। তবে যদি এই খবর সত্য হয় তাহলে এটি গাজা যুদ্ধের সামরিক ও রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ দেইফের মৃত্যু কী প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে বিশ্ব রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। এখন নজর থাকবে হামাসের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এবং এর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।