স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও শক্তিশালী করার জন্য একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি, রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যা ৩ মার্চ সোমবার জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত।
৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চিহ্নিত অপরাধী, সন্ত্রাসী এবং মাদক ব্যবসায়ী ও চোরা কারবারিদের ধরতে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে।
পুলিশ, প্রশাসন, বিচার বিভাগ এবং পাবলিক প্রসিকিউটরদের অংশগ্রহণে সারাদেশে ‘মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আইন প্রয়োগ’ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যাতে তারা আরও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে পারে।
পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট প্রধান, উপপুলিশ কমিশনার, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা প্রতিটি ঘটনায় গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে গণমাধ্যমে নিয়মিত ব্রিফিং দিচ্ছেন।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট এবং অপরাধপ্রবণ এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও বিজিবি যৌথভাবে অপারেশন পরিচালনা করছে।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশাপাশি, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের অতিরিক্ত প্যাট্রোলিং কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে নদী পথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
ঢাকার ছিনতাইকারী, ডাকাত, কিশোর গ্যাংসহ অন্যান্য অপরাধী গ্রুপের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চলছে। এসব এলাকায় অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হচ্ছে।
সন্ত্রাসী তালিকা নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে, এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা শহরের আশপাশের এলাকা, বিশেষত টঙ্গী, বসিলা, কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে।
ডিএমপি’র পুলিশ সদস্য, বিজিবি, আনসার এবং কোস্টগার্ডের জন্য নতুন মোটরসাইকেল কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যা অলিগলিতে দ্রুত টহল দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে।
মিথ্যা তথ্য, গুজব ও প্রোপাগাণ্ডার বিরুদ্ধে প্রকৃত তথ্য প্রচারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা, পুলিশের আইজিপি, ডিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়মিত ঝটিকা পরিদর্শন করছেন থানাগুলো চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম মনিটরিং করতে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রশাসনিক বিভাগে বৈঠক করেছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
ডিএমপি’র বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে রাত্রিকালীন টহল কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়মিত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মামলা যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তকরণে জেলা ও মেট্রোপলিটন পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে নিরপরাধ ব্যক্তিরা মামলার হয়রানি থেকে রক্ষা পাচ্ছেন।
জুলাই বিপ্লবের শহিদ পরিবারের মামলাগুলোর মনিটরিংয়ের কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চলমান রয়েছে, যাতে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা যায়।
প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, জনগণের নিরাপত্তা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে এসব পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নিরাপদ সমাজ গড়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের এই পদক্ষেপগুলো জনগণের কাছে আশার আলো হিসেবে দেখা যাচ্ছে, এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।