বৃহস্পতিবার, ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতিতে নতুন টানাপোড়েন: ঐক্যের পথে আদর্শিক বিভক্তি?

বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে পরিচিত। সরকার গঠন থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনীতির মঞ্চে একসঙ্গে কাজ করার ইতিহাস রয়েছে তাদের। তবে সম্প্রতি দুই দলের মধ্যে দূরত্ব ও আদর্শিক বিভক্তির বিষয়টি সামনে এসেছে। দীর্ঘ ১৬ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে একসঙ্গে থাকলেও বর্তমানে তাদের ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জামায়াত ইসলামী এবং বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে মতভিন্নতার প্রসঙ্গ। জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন প্রত্যেক দলের নিজস্ব চিন্তা ও স্বার্থ থাকে। কখনো কখনো একই লক্ষ্য নিয়ে চললেও ভিন্নমত দেখা দিতে পারে। এই বক্তব্যে তিনি ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করলেও আদর্শিক দূরত্বের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।

অপরদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জামায়াতকে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে না দেখলেও তাদের সাম্প্রতিক অবস্থানকে ভিন্ন দলের আচরণ বলে উল্লেখ করেছেন। ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন জামায়াত ২০১৮ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। এখন তারা ভিন্ন কথা বলছে যা নতুন বাস্তবতার প্রতিফলন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন জামায়াত ইসলামী তাদের আদর্শিক নীতি বজায় রেখে নতুন একটি বৃহত্তর জোট গঠনের দিকে এগোচ্ছে। অন্যদিকে, বিএনপি তাদের যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংগ্রাম চালিয়ে যেতে চায়। এই অবস্থায় দুই দলের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।

যদিও দুই দলই তাদের মতবিরোধ স্বীকার করেছে, তবুও বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করেনি। অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের মতে দেশের উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র রক্ষায় বৃহত্তর ঐক্য অপরিহার্য। অপরদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাদের দল মধ্যপন্থী গণতান্ত্রিক আদর্শের ধারক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রতিষ্ঠিত।

বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে বিদ্যমান দূরত্ব একদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন প্রশ্ন তুলেছে, অন্যদিকে ভবিষ্যতের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। আদর্শিক ভিন্নতা ও সাংগঠনিক অবস্থান দুই দলের চলার পথ আলাদা করছে তবে জাতীয় স্বার্থে এই বিভক্তি কি দীর্ঘস্থায়ী হবে নাকি নতুন করে ঐক্যের সূত্রপাত ঘটবে, তা সময়ই বলে দেবে।

জানার ইচ্ছা এই বিষয়ে পাঠকদের সামনে যথাযথ তথ্য তুলে ধরে আরও বিশ্লেষণ নিয়ে আসবে। আমাদের সঙ্গে থাকুন।

আরও পোস্ট