২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝেরচর এলাকায় এমভি আল বাখেরা লাইটার জাহাজে সাতজনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহতরা ঘটনার সময় গভীর ঘুমে অচেতন ছিলেন, যা থেকে অনুমান করা হচ্ছে যে, তাদের হত্যা করার আগে চেতনানাশক দিয়ে নিস্তেজ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় একমাত্র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত। শ্বাসনালীতে আঘাত পাওয়ার কারণে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহতরা প্রতিটি রুমে ঘুমাচ্ছিলেন এবং তাদের শরীরে মস্তক ছাড়া অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, যা হত্যাকাণ্ডের পৈশাচিকতা আরও বৃদ্ধি করে।
ডাকাতি নাকি পূর্বশত্রুতা?
এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পেছনে ডাকাতি না পূর্বশত্রুতা রয়েছে, তা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। চাঁদপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানিয়েছেন, “এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে চেতনানাশক ব্যবহার করে ঘটানো হয়েছে। এটি কোনো সাধারণ ডাকাতি নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।”
অন্যদিকে, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন মনে করেন, জাহাজে মূল্যবান মালামাল থাকার কারণে এটি ডাকাতির উদ্দেশ্যে সংঘটিত হতে পারে। তবে তিনি আশাবাদী যে, তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত হবে।
নৌপথে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
এ ধরনের নৃশংস ঘটনার পর, নৌপথে চলাচলকারী সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশাসন এই ঘটনার পর থেকে নৌপথের নিরাপত্তা আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, জাহাজের নাবিকদের ভূমিকা এবং ঘটনাস্থলে পাওয়া আলামত যাচাই করা হচ্ছে। এছাড়া, ঘটনার সঙ্গে কোনো অভ্যন্তরীণ চক্রান্তের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চাঁদপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা এর আগে কখনোই এমন পরিকল্পিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সম্মুখীন হননি। নদীপথের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে যে, অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
সাধারণ জনগণ আশা করছে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ শিগগিরই উদ্ঘাটিত হবে এবং দোষীরা শাস্তি পাবে। জানার ইচ্ছা পরিবারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে গভীর শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছে।